২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বব্যাপী বেশ কিছু নতুন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইন, সনদ ও সংস্থা, যেমন UN Men, Convention on the Elimination of discrimination against Men ( CEDAM), International Convention on Men’s Rights, পুরুষপক্ষ, পুরুষ ও শিশু নির্যাতন দমন প্রতিরোধ আইন’২০৫০, নির্যাতিত পুরুষ নিরাপত্তা তহবিল ইত্যাদি হতে পারে। কিছু কেইস স্টাডি:
১. পাইরেটস অফ দ্যা ক্যারিবিয়ান খ্যাত জনি ডেপ ও তার সাবেক স্ত্রী আম্বার হার্ডের পাল্টাপাল্টি মামলা বেশ সরব আলোচনার জন্ম দিয়েছে। জনি ডেপ মার্কিন আদালতে তার সাবেক স্ত্রী কর্তৃক নির্যাতন, নিপীড়নের স্বাক্ষ্য ও মেডিকেল রিপোর্ট দিয়েছে, গ্লাস ছুড়ে আঙুল থেতলে দেয়ার প্রমানসহ তাকে নির্যাতনের প্রায় একঘন্টার অডিও আদালতে জমা দিয়েছেন। আম্বার হার্ডও কলাম লিখেছে ‘I spoke up against sexual violence -faced our culture’s wrath. That has to change.
২. Deepika Bhardwaj তার ‘Martyrs of Marriage’ ডকুমেন্টারি ও টেডটক ‘Men- The Forgotten Gender’তে ভারতে পুরুষ নির্যাতনের করুন এক প্রামানিক চিত্র তুলে ধরেছেন। তার মতে আমাদের নদী রক্ষা কমিশন আছে, পশু-প্রানী রক্ষা কমিশন আছে, আছে নারীদের জন্য স্বতন্ত্র কমিশন; নেই শুধু পুরুষ কমিশন।
৩. ব্রিটেনের মার্কেটিং কনসালট্যান্ট ও পলিটিক্যাল এক্টিভিস্ট Matt O’ Connor ডিভোর্সের কারনে সন্তানরা মায়েদের কাছে থাকে, বাবারা বঞ্চিত হয়, তারমতে সব বাবাই সুপারহিরো, কিন্তু সমাজে চলে ‘North Korean Style of family justice’ সেই ক্ষোভ থেকে প্রতিষ্টা করেন F4J বা Fathers4Justice, এই সংঘটন মনে বিয়ে আজ পুরুষ মারার ফাদে পরিনত হয়েছে বা Marriage is a Mantrap.
৪. ইউরোপ ও মার্কিন মুল্লুকে ডিভোর্সের কারন হিসাবে স্ত্রীরা স্বামীর অত্যাচার নির্যাতনকে দায়ী করেন এবং সে কারনে পুরুষদের গুনতে হয় তার কষ্টে অর্জিত সম্পতির বিশাল অংক।দাম্পত্য দোষারোপের এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার লক্ষ্যে ব্রিটেন No- Fault divorce law’২০২০. সমস্যা হলো এই আইনের পর হুরহুর করে পুরুষ কর্তৃক ডিভোর্স দেয়ার প্রবনতা বেড়েছে।
৫. ডয়েচে ভেলে রিপোর্ট করেছে ‘Bangladesh: Male victims of domestic violence demand gender-neutral laws. বিচারবঞ্চিত নির্যাতিত এক হুইসেল ব্লোয়ার পুরুষ মাজেদ আজাদ প্রতিষ্টা করেছেন Bangladesh Men’s Rights Foundation. তাদের জরিপ মতে প্রায় ৮০% বিবাহিত পুরুষ কোন না কোনভাবে মানসিক নির্যাতনের শিকার।
৬.নিউমার্কেটে সংঘর্ষে নিহত নাহিদের স্ত্রী ডালিয়ার পত্রিকায় প্রচারিত একটি মন্তব্য আমাকে বেশ নাড়া দিয়েছে। নাহিদের স্ত্রী বলেছেন,’নিজের জন্য নাহিদ কিছু কিনতে চাইত না। আমার কোনটা লাগবে, কোনটা প্রয়োজন, সব আমাকে নিয়েই করত। এখন আমাকে কে দেখবে, আমাকে কে ভরসা দেবে? কে নিবে আমার দ্বায়িত্ব?’
নাহিদের মৃত্যু ও মৃত্যু পরবর্তী নাহিদের স্ত্রীর আর্তনাদ আমাদের চিরায়ত বাংলার চিত্র! পুরুষ মাত্রই দায়িত্ব! স্ত্রীর দায়িত্ব, সন্তানের দায়িত্ব, বাবা-মার দায়িত্ব, চাকরী/ ব্যবসা ঠিক রাখার দায়িত্ব, বস কে খুশি রাখার দায়িত্ব, বাজার-সদাই, জীবন-জীবিকার দায়িত্ব। এ এমনই দায়িত্ব, যেন মৃত্যু হলেও মাফ নেই। বাচ্চা দুটোর জন্য মিনিমাম কিছু করে যেতে হবে, নইলে আমি মরে গেলে কি হবে ওদের!নিজের কষ্টের মাইনা দিয়ে নিজে কিছু না কিনে সবার জন্য ঈদ উপহার কিনে বাদুর ঝুলে বাড়ি গিয়ে সবার হাতে হাসিমুখে তুলে দিলে সমাজের চোখে আপনি মানবিক।অন্যথায়,আপনি ভিলেন।
তবুও টিকুক পৃথিবীর প্রাচীনতম প্রতিষ্ঠান পরিবার, টিকুক নারী- পুরুষের সমতায়, সহযোগিতায়, সমানাধিকারে, সৌহার্দে আর সাম্যে, স্রষ্টার অপার মহিমায়।